চোখের কোণ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল। শূন্যতা পূরণে কী যেন খুঁজছে পার্কের কোয়ারেন্টিন সেলের ভেতর। মাত্র সাড়ে তিন মাস বয়সেই মা হারিয়ে দলছুট হাতির বাচ্চাটির আশ্রয় হয়েছে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। হাতিটির মাকে খুঁজতে কাজ করছেন বন বিভাগের কর্মীরা।
১০ মার্চ বিকেলে কক্সবাজারের টেকনাফের শাপলাপুর হোয়াইক্যং থেকে বাচ্চা হাতিটিকে একা পেয়ে ধরে ফেলেন স্থানীয় লোকজন।
খবর পেয়ে শামলাপুর রেঞ্জের বনকর্মীরা গিয়ে হাতির শাবকটিকে উদ্ধার করেন। পরে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তে শাবকটির ঠাঁই হয় চকরিয়া ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে।
এ দিকে মুক্ত বনাঞ্চল ছেড়ে পার্কের আইসোলেশনে স্থান হওয়া শাবকটিকে পরম মমতায় আগলে রেখেছেন পার্কের পরিচর্যাকারীরা।
শাবকটির পরিচর্যা কাজে নিয়োজিত বীর সেন চাকমা বলেন, ‘আমি হাতির শাবকটির সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করছি। প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর শাবকটিকে দুই লিটার করে ল্যাকটোজেন-ওয়ান খাওয়ানো হচ্ছে। অন্য কোনো খাবার খাচ্ছে না সে।’
চকরিয়া বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের তত্ত্বাবধায়ক, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শাবকটি মোটামুটি সবল ও সুস্থ আছে। শাবকটির বয়স আনুমানিক সাড়ে তিন মাস।
বর্তমানে তাকে পার্কের কোয়ারেন্টিন সেলের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, এই বয়সে মা ছাড়া বাচ্চা বাঁচানো খুবই কঠিন। এ ছাড়া শাবকটি বর্তমানে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। বাচ্চাটি পুরোপুরি সুস্থ হতে সময় লাগবে আরও অন্তত দুই সপ্তাহ।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির নিউজবাংলাকে জানান, হাতির পাল থেকে আলাদা হয়ে বাচ্চাটি পথ ভুল করে লোকালয়ে চলে আসে। মা হাতিটিকে বনের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করা হলেও কোথাও সন্ধান মেলেনি।
পরে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে সাফারি পার্কে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাচ্চাটির মাকে খোঁজার চেষ্টা করছি। যদি হাতিটির মায়ের সন্ধান পাওয়া যায় তাহলে বাচ্চাটি মায়ের কাছে ফেরত পাঠানো হবে।’